Description
জীবনে সব কিছু মাপ মতো হতে নেই। মাঝেমধ্যে মাপের চেয়ে কিঞ্চিৎ বড়ো হওয়া ভালো। কারণ সেই কবে রাজেশ খান্না বলে গেছেন, “বাবুমশাই জিন্দেগি লম্বি নেহী বড়ি হোনি চাহিয়ে”। বাবু মানে তো আমরা, বাঙালি ছাড়া আরে কেউ হন না। কিন্তু বাঙালি কি আদৌ সে-কথা মেনেছে? হয়তো উত্তর মিলতে পারে ‘ওগো মায়া ওগো বাতায়ন’-এ। আয়নায় আমরা যাকে দেখি, আদৌ কি সে আমার প্রতিবিম্ব? নাকি আসলে আয়না একটা মাধ্যম, যার মধ্যে দিয়ে আমার শুধু নিজেকে সুন্দর দেখতে পছন্দ করি! চুল আঁচড়ানো, পাউডার, স্নো, লিপস্টিক- সে কি আমাকে কেবল ঢেকে দিতে? কিন্তু ওই আমি-কে যদি টপকে যেতে পারি? ওই চকচকে পারার পেছনের ‘আমি’-কে যদি দেখতে পাই? হয়তো দেখব আসলে সেটাই হচ্ছে আমার প্রতিবিম্ব। সে কিন্তু পারায় দেখতে পাওয়া চকচকে আমি নই। সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের এই বইটি আমাদের সেই আয়নার ভেতরের গলিঘুঁজির পথটা কে পেরিয়ে চকচকে পারার ও প্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। আসলে যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আমার অপেক্ষায়। আসলে সবই মায়া…বাতায়নের এ পারে কিন্তু, ‘ওগো মায়া ওগো বাতায়ন’ আসলে বাতায়নের ওপার।
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় তাত্ত্বিক, সমালোচক এবং সিনেমার শিক্ষক, এই পরিচয় সর্বজনবিদিত। বাংলা ও বাঙালি বিষয়ক তাঁর স্মৃতি-ভারাতুর, রসাত্মক, মায়ামেদুর লেখনী আমাদেরকে তাড়িত করে, বিচলিত করে, ভাবায়, হাসির কলরোল উপহার দেয় এবং তর্কপরায়ণ করে তোলে। সংকলনটিতে নানা ছোটো পত্রিকায় প্রকাশিত দিনযাপনের উপাখ্যান অথবা ভাবনা-চিন্তার সাপলুডোর নানা জিনিস যেমন সাজিয়ে দেওয়া গেল, সেখানে ফিরে ফিরে এসেছে ঝরা সময়ের কথা। এই বইয়ের মেজাজের মধ্যে আছে তেজপাতারঙা বিষাদ, অথবা দাঁতে কাঁটা লবঙ্গের সুঘ্রাণের মতো স্মৃতির সুবাস।
বাঙালির ভালোবাসার শিল্পী সনাতন দিন্দা, এই বইয়ের জন্য ছবি এঁকেছেন। তাঁর শৈল্পিক বোধ, আঁকার নৈপুণ্য প্রশ্নাতীত। কিন্তু বার বার বিদেশযাত্রা, বডিপেন্টিং প্রতিযোগিতা, বাবার অসুস্থতার মধ্যেও কোনো এক গভীর রাত্রির কালো ডানার মধ্যে সনাতনদা এই শহরের কোনো এক নির্জন-অলীক গলির আলো-আঁধারি নকশার মধ্যে বসে এইসব রেখাচিত্র সাজিয়েছেন অকাতরে।
Reviews
There are no reviews yet.